1. dainiklalmai@gmail.com : XC7ZGKLiZP :
  2. notonpakhi7@gmail.com : Md anwar : Md anwar
April 12, 2025, 3:54 am
সর্বশেষ খবর
লালমাই উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটি গঠন আহবায়ক-মোঃ মাসুদ করিম সদস্য সচিব-মোঃ ইউসুফ আলী মীর পিন্টু লালমাইয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র ঈদ প্রীতি অনুষ্ঠান লালমাইয়ে হরিশ্চর ইউনিয়ন হাই স্কুল এন্ড কলেজে পুনর্মিলনী “নীড়ে ফেরা” বর্ণিলভাবে উদযাপন লালমাইয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র দোয়া ও ইফতার মাহফিল লালমাই প্রেসক্লাবের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত লালমাইয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস পালিত লালমাইয়ে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা কুমিল্লা জেলা শাখার উদ্যাগে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

লালমাই অক্সিজেনের অভাবে প্রবাসীর মৃত্যু ও চিকিৎসকের কান্না-দৈনিক লালমাই

  • Update Time : Monday, August 2, 2021
  • 394 Time View

রুহুল আমিন (লালমাই) কুমিল্লা।
সোহেল আহমেদ (৩০)। বাড়ী কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার ঝলম ইউনিয়নের ওড্ডা। কাতারে ছিলেন দীর্ঘ ৭বছর। গত ৫ মাস পূর্বে দেশে চলে আসেন। করোনাকালে কোন কাজ না পেয়ে কয়েক মাস ধরে রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন। ঈদ উল আযহার দু’দিন আগে হঠাৎ জ্বর ও কাঁশ শুরু হয়। অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে যেতে থাকে। ঈদের পর কুমিল্লা পিপলস হাসপাতালে এক্সরে সহ কয়েকটি পরীক্ষা করান। রিপোর্ট দেখে চিকিসৎকরা করোনা হয়েছে বলে কিছু ঔষধ লিখে দেন। ঔষধে কোন কাজ হচ্ছিল না।

একজন পল্লী চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে ভর্তি করা হয় কুমিল্লা জাঙ্গালিয়াস্থ ন্যাশনাল হাসপাতালে। এক সপ্তাহ পর অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৩৭-এ নেমে আসায় গত ৩১ জুলাই দুপুরে সেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে। আত্মীয় স্বজনদের সহায়তায় ন্যাশনাল হাসপাতালের বিল ৩৪ হাজার টাকা পরিশোধ করতে পারলেও ঢাকায় নেওয়ার মতো তাদের হাতে আর কোন নগদ টাকা ছিলনা। তাই তারা শনিবার বিকালে সোহেল কে লালমাই উপজেলার বাগমারা ২০ শয্যা হাসপাতালে নেন।

লালমাই উপজেলার প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও হাসপাতালের আরএমও ডা: আনোয়ার উল্যাহ রোগীর অক্সিজেন স্যাচুরেশন দেখে ভর্তি না নিয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। কিন্তু কুমেক-এ সিট খালি না থাকায় বাগমারা হাসপাতালেই রোগীর ভর্তির ব্যবস্থা করতে চিকিৎসকদের অনুরোধ করেন সোহেলের মা ফিরোজা বেগম ও স্ত্রী খাদিজা আক্তার। এরপর আরএমও’র সম্মতিতে সোহেলকে ভর্তি দিয়ে করোনা ইউনিটের ৭নং বেডে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সেবা প্রদান শুরু করা হয়।

এদিকে হাসপাতালের ৫টি খালি সিলিন্ডার (৭.৫ কিউবিক মিটার) রিফিল করে বিকাল ৫টার মধ্যে হাসপাতালে পৌঁছার কথা থাকলেও পৌঁছেনি। সন্ধ্যা ৭টায় হাসপাতালের অবশিষ্ট সেন্ট্রাল অক্সিজেনও শেষ হয়ে যায়। তখন সোহেল কে হাসপাতালের রিজার্ভে থাকা ২টি সিলিন্ডার (২ কিউবিক মিটার ) দিয়ে অক্সিজেন সেবা অব্যাহত রাখা হয়। রাত ১২টার পর ওই ২টি সিলিন্ডারও শেষ হয়ে যায়। ততোক্ষনেও রিফিল সিলিন্ডার গুলো হাসপাতালে পৌঁছেনি।

ওই সময় আরএমও অনুরোধ করে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্য দু’জন রোগীর অক্সিজেন সিলিন্ডার থেকে সোহেল কে অক্সিজেন সেবা দেওয়া হয়। এরই মধ্যে রিফিল সিলিন্ডার নিয়ে হাসপাতালমুখী স্পেক্ট্রা কোম্পানীর গাড়ী চালক কে বার বার ফোন করা হয়। সিলিন্ডার নিয়ে দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছানোর জন্য। কিন্তু রিফিল করতে বিলম্ব হওয়ায় গাড়ী চালক দুঃখ প্রকাশ করে জানান, বাগমারা পৌঁছতে তার অনুমান সকাল ৬টা বাজবে। একই সময়ে আরএমও লালমাই উপজেলার সবকয়টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দায়িত্বশীলদের অক্সিজেন সিলিন্ডারের জন্য ফোন করেন। কিন্তু ওই সময় কোন সংগঠনের হাতে কোন রিজার্ভ সিলিন্ডার ছিল না। রাত অনুমান ৩.৪৫টায় হাসপাতালে থাকা সকল সিলিন্ডারের অক্সিজেন শেষ হয়ে যায়। এরপর আধা ঘন্টা তাকে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর মেশিন দিয়েও শ্বাস দেওয়া হয়।

একপর্যায়ে মেশিনেও তাকে অক্সিজেন সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। অক্সিজেন নিতে না পেরে সোহেল ছটপট শুরু করেন। চোখের সামনে অক্সিজেনের জন্য রোগীর মৃত্যু যন্ত্রনা দেখে আরএমও সহ রোগীর স্বজন, অন্যরোগী ও তাদের স্বজনরা কান্না শুরু করেন। ভোর রাত অনুমান ৪টায় সোহেল আহমেদ মৃত্যু বরণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি মা,বাবা, স্ত্রী, নুসিফা (৮) ও রুইজা (৪) নামে দুই কন্যা সন্তান রেখে গেছেন।

করোনা ইউনিটে দায়িত্বরত উপ-সহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার রবিউল আলম বলেন, আরএমও স্যার এই রোগীর জন্য অক্সিজেন সংগ্রহ করতে অনেক জনকে ফোন করেছেন। সারা রাত স্যার করোনা ইউনিটে ছিলেন। রিফিলের গাড়ী সময়মত পৌঁছলে হয়ত রোগীর মৃত্যু হতো না। মৃত্যুর পর নিজ চেম্বারে ডেথ সার্টিফিকেট লিখতে বসে আরএমও স্যার প্রায় আধা ঘন্টা কান্না করেছেন।

রোগীর স্ত্রী খাদিজা আক্তার জুলি বলেন, বাগমারা হাসপাতালের চিকিৎসকরা আমার স্বামীকে বাঁচাতে অনেক চেষ্টা করেছেন। ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৪টি সিলিন্ডার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। শুধুমাত্র অক্সিজেনের অভাবে আমরা পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম কে হারিয়েছি।

বাগমারা হাসপাতালের আরএমও আনোয়ার উল্লাহ্ বলেন, অক্সিজেনের অভাবে রোগীর মৃত্যু সহ্য করতে কষ্ট হয়েছিল। রাতে অক্সিজেন সংগ্রহের জন্য অনেক চেষ্টা করেছি। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর দায়িত্বশীলদেরও ফোন করেছি। অবশ্য রোগীর মৃত্যুর এক ঘন্টা পর রিফিল সিলিন্ডারের গাড়ী হাসপাতালে পৌঁছেছে।

উল্লেখ্য বাগমারা ২০ শয্যা হাসপাতালটিতে এখনো সরকারিভাবে ইনডোর স্বাস্থ্য সেবা চালু করা হয়নি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে শুধুমাত্র আউটডোর সেবা চালু রাখার নির্দেশনা রয়েছে। এখন পর্যন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে কোন ধরনের সরকারি অর্থ বরাদ্দও আসেনি। তারপরও অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মুস্তফা কামাল এমপির ব্যক্তিগত উদ্যোগে ও আবুল খায়ের কোম্পানীর সহযোগিতায় গত ২৫ এপ্রিল এই হাসপাতালটিতে ২টি আইসিইউ শয্যাসহ মোট ১২টি অক্সিজেন শয্যা স্থাপন করা হয়।


প্রিন্ট

খবরটি ফেসবুকে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
স্বত্ব © ২০২২ দৈনিক লালমাই সম্পাদক ও প্রকাশক: মোস্তফা কামাল মজুমদার
প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানঃ লাকসাম আই.টি: 01712-808501