শতবর্ষী বাগমারা উচ্চ বিদ্যালয়
সভাপতি হিসেবে ৬ মাস পূর্ণ করলেন
মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম।
মোহাম্মদ রুবেল হোসেন
শতবর্ষী বাগমারা উচ্চ বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে ৬মাস পূর্ন করলেন মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায় গত ৪ জুন ২০২৫ কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড মোহাম্মদ শহিদুল ইসলামকে সভাপতি করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট এডহক কমিটি অনুমোদন দেন। গত ২২ জুন এই কমিটি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। নিয়মানুযায়ী আজ ৩ ডিসেম্বর ৬ মাসের মেয়াদ শেষ করলেন বর্তমান কমিটি। এই কমিটি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই শতবর্ষী এই বিদ্যাপীঠের অতীত সুনাম ফিরিয়ে আনতে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
উল্লেখযোগ্য উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে:
ক। একাডেমিক শৃংখলা প্রতিষ্ঠা:
শিক্ষকগণের আচরণিক ও পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নে দুই দিন ব্যাপী ইন-হাউজ প্রশিক্ষণের আয়োজন, বিদ্যালয়ের শিক্ষকমন্ডলীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলমান অন্ত:কোন্দল সম্পূর্ণভাবে নিরসন, বিদ্যালয় বিমুখ শিক্ষার্থীদের নিয়মিত শ্রেণিকক্ষে উপস্থিতি নিশ্চিত করা, শিক্ষার্থীদের আচরণিক শৃংখলা ফিরিয়ে আনা এবং অভিভাকগণের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা, ১ম বারের মত সকল শ্রেনিতে মাসিক পরীক্ষা চালু করা, বিষয় ও সিলেবাস ভিত্তিক পাঠদান নিশ্চিত করা,
শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় উৎসাহী করার জন্য প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সহায়তায় মেধাবীদেরকে পুরুস্কৃত করা, আগামী ২০২৬ ও ২০২৭ সালের এসএসসি পরীক্ষায় মান সম্মত ফলাফল অর্জনের লক্ষ্যে সরকারের বিভিন্ন উচ্চপর্যায়ে অধিষ্ঠিত প্রাক্তন কৃতী শিক্ষার্থীদের নিয়ে ৯ম ও ১০ম শ্রেনির ছাত্র, শিক্ষক ও অভিভাবকগণের সমন্বয়ে মতবিনিময়সভা, বৃত্তি ও এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা হোস্টেল চালু করা,
পরীক্ষার এডমিট কার্ড, ফলাফল তৈরি, বেতন, সেশন ফি আদায়ে স্বচ্ছতা আনয়নের জন্য ওয়েবসাইট চালু করা, এ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ডা: অমৃত কুমার দেবনাথ ও আবু নোমানের পক্ষ থেকে আসন্ন নির্বাচনি ও বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মেধাবী ও গরীব শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ পুরুষ্কার ঘোষণা ও আর্থিক সহযোগিতার উদ্যোগ, লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)'র সহায়তায় রাতের বেলা স্কুল ক্যাম্পাসে বহিরাগতের প্রবেশ ও মাদক সেবন বন্ধ করা, খন্ডকালীন শিক্ষক ও কর্মচারীদের মাসিক ভাতা বৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য।
খ) অবকাঠামোগত উন্নয়ন: শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে যোগাযোগ করে পূর্বে বরাদ্ধকৃত প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে প্রধান গেইটের নির্মাণ কাজ শুরু করা, লালমাই উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় ৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ওয়াকওয়ে নির্মাণ, প্রাক্তন শিক্ষার্থী প্রকৌশলী মো: আবদুস সাত্তারের সার্বিক সহযোগিতায় কুমিল্লা শিক্ষা প্রকৌশল অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী কর্তৃক বিদ্যালয়ের অবশিষ্ট সীমানা প্রাচীর নির্মাণ ও পুরাতন ভবনের জরাজীর্ণ ফ্লোর-ছাদ মেরামত ও সংস্কারের জন্য প্রায় ১ কোটি টাকার ব্যয় প্রাক্কলন তৈরি করে ঢাকা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে প্রস্তাব প্রেরণ, বিদ্যালয়ের পুকুরের জায়গার জন্য রেল লাইন ও মহাসড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জটিলতা নিরসনের উদ্যোগ গ্রহণ,
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীর সুমন আহমেদ হানিফের সহায়তায় নামাজের কক্ষ টাইলস করা।
এছাড়া বিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে অজুখানা নির্মাণ, পূর্ব পাশের ভাউন্ডারির খালি জায়গায় জিআই সিটের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, পশ্চিম পাশের পুরাতন ভবন ও হোস্টেলের সকল ভাংগা ও ব্যবহার অনুপযোগী দরজা-জানালা পরিবর্তন করে নতুন করে লাগানো, সকল শ্রেনি কক্ষের জরাজীর্ণ বৈদ্যুতিক লাইন অপসারণ করে নতুন লাইন লাগানো , বৃষ্টির দিনে শ্রেনিকক্ষে ও টয়লেটে যাওয়ার সুবিধার্থে ঢালাই রাস্তা ও টিনের শেড নির্মাণ, শিক্ষার্থীদের জন্য বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা, সকল টয়লেট ও বেসিন সংস্কার ও মেরামত, জরাজীর্ণ শ্রেনিকক্ষগুলো মেরামত ও রঙ করা, লাইব্রেরি কক্ষ বর্ধিতকরণ, শ্রেনি কক্ষ ও হোস্টেলের জন্য ৩০টি ফ্যান ক্রয়, প্রাচীন এই বিদ্যাপীঠের কর্মপরিবেশ উন্নতির জন্য প্রধান শিক্ষকের কক্ষ সংস্কার, অফিস টেবিল ও চেয়ার ক্রয়, শিক্ষক মিলনায়তন বড় করা ও মহিলা শিক্ষকগণের জন্য নামাজের কক্ষ তৈরি, অফিসের জন্য ফটোকপি মেশিন ক্রয়সহ বিভিন্ন সংস্কার ও উন্নয়ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দিয়ে কমিটি করে সুষ্ঠুভাবে সম্পাদিত হয়।
এছাড়া ৯৪ ব্যাচের পক্ষ থেকে বিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য ৬০ টি ফুলের টব ও সকল শ্রেনিকক্ষে বিভিন্ন উপদেশ সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদান করা হয়।